নিজস্ব প্রতিবেদক
জনতার বাণী,
ঢাকা: পবিত্র মাহে রমজানের আজ
২৬ তারিখ। আজকের দিবাগত রাত
বা রমজানের ২৭তম রাত
সাধারণভাবে লাইলাতুল কদর বা
কদরের রাত হিসেবে পরিচিত।
অত্যন্ত ফজিলতের রাতটি রহস্যপূর্ণ
হলেও রমজানের ২৭ তারিখের রাতকে
অফুরন্ত বরকতময় বলে বিবেচনা করা
হয়।
আভিধানিকভাবে লাইলাতুল কদর
অর্থ সম্মানের রাত। অত্যন্ত
মহিমান্বিত একটি রাত নামেও
আখ্যায়িত হয়েছে। কুরআন মাজিদে
একটি সূরা নাজিল হয়েছে এ প্রসঙ্গে।
এতেই ঘোষণা করা হয়েছে, ‘লাইলাতুল
কদরের মর্যাদা হাজার মাসের চেয়ে
উত্তম।’
তাফসিরের কিতাবগুলোতে উল্লেখ
রয়েছে, একদিন নবী করিম
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম এই ভেবে অস্থির হচ্ছিলেন
যে, আগের নবীর উম্মতেরা দীর্ঘ
হায়াত পেত। ফলে তারা অনেক বেশি
ইবাদত-বন্দেগির সুযোগ পেত। কিন্তু শেষ
নবীর উম্মতের হায়াত খুবই সীমিত।
অতএব তাদের পক্ষে উচ্চমর্যাদা
লাভের সুযোগ কম।
তখন আল্লাহর পক্ষ থেকে এই সূরা
নিয়ে উপস্থিত হন হজরত জিবরাইল
(আ.)। ফলে শান্ত হন মহানবী (সা.)
ও তার সাহাবিরা। আল্লাহ
তায়ালা এ রাতেই কুরআন নাজিল
করেছেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন। তেমনি
এ রাতটির মর্যাদা হাজার মাসের
চেয়ে উত্তম বলেও ঘোষণা করেছেন।
কিন্তু রাত কোনটি তা বলে দেননি।
হাদিস শরিফেও নির্দিষ্ট করে বলা হয়নি
কোনটি কদরের রাত। নিঃসন্দেহে এতে
অনেক রহস্য ও তাৎপর্য নিহিত রয়েছে।
রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন,
তোমরা রমজানের শেষ দশকের বেজোড়
রাতগুলোতে কদরের রাত অনুসন্ধান
করবে।
কুরআন মাজিদের বর্ণনানুযায়ী, এই
এক রাতে ইবাদতের বিনিময়ে হাজার
মাসের ইবাদতের সওয়াবের চেয়েও
বেশি সওয়াব পাওয়া যায়।
কেউ কেউ রমজানের যেকোনো অংশে এ
রাত হতে পারে বলে মন্তব্য করেন।
কিন্তু বেশির ভাগ মনীষীর মতে,
রমজানের শেষ দশকেই তা লুকায়িত
রয়েছে। আবার কারো কারো মতে, এ
রাতের তারিখ পরিবর্তনশীল। কোনো
বছর একুশ, কোনো বছর তেইশ, কোনো বছর
পঁচিশ, কোনো বছর সাতাইশ, আবার
কোনো বছর ঊনত্রিশ তারিখের রাত
লাইলাতুল কদর হয়।
কিন্তু সাহাবায়ে কেরাম থেকে শুরু
করে পরবর্তী সময়ে অনেক মনীষী
রমজানের সাতাইশ তারিখের রাতকে
লাইলাতুল কদর হিসেবে চিহ্নিত
করেছেন।
এ ব্যাপারে সাহাবিদের মধ্যে এ
উম্মতের শ্রেষ্ঠ ক্বারী হিসেবে
আখ্যায়িত হজরত উবাই ইবনে কাব
(রা.)-এর নাম বিশেষভাবে
উল্লেখযোগ্য। তিনি জোর দিয়ে বলতেন,
রমজানের ২৭তম রাতই কদরের রাত।
