মানবতাবিরোধী অপরাধী সাকা-মুজাহিদের ফাঁসির রায় কার্যকরে স্বস্তি প্রকাশ করেছেনশহীদ পরিবারের সদস্যরা। এ জন্য তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। এসব ঘৃণ্য অপরাধীর সম্পদ বাজেয়াপ্তেরও দাবি জানিয়েছেন শহীদ পরিবারের পক্ষ থেকে।শহীদ ডা. আজহারুল হকের স্ত্রী সালমা হক বলেন, এ অনুভূতি বোঝানো কঠিন। ৪৪ বছর ধরে অপেক্ষা করেছিলাম। এখন স্বস্তি বোধ করছি। হালকা বোধ করছি। আজকে খুব জাহানারা আপার কথা মনে পড়ছে। তিনি বলেন, ১৫ নভেম্বর আমার স্বামীকে ধরে নিয়ে যায়। আমি তখন ৬ মাসের অন্তঃস্বত্ত্বা ছিলাম। আমাদের সংসার জীবন ছিল মাত্র এক বছর ৯ মাসের।সালমা হক বলেন, যখন আলবদর, আলশামস, মানবতাবিরোধী অপরাধীদের গাড়িতে পতাকা উড়েছে, মন্ত্রী হয়েছেন- তখন মনে হয়েছিল, আর হয়ত স্বামী হত্যার বিচার পাব না। এখন মনে হচ্ছে আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নয়। এই আনন্দ বলে বোঝাতে পারব না।শহীদ জহির রায়হানের ভাই ও ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবীর বলেন,গণহত্যার বিচার হয়েছে কিন্তু গত ৪৪ বছর ধরে ৩০ লাখ শহীদ পরিবারে যে দুঃখ কষ্ট হয়েছে এর বিচার হয়নি। ৪৪ বছর ধরে এ অপরাধীরা বাংলাদেশ থেকে যেসব সম্পদ অর্জন করেছে তা বাজেয়াপ্ত করে শহীদ পরিবারকে দিতে হবে। তারা তো এ দেশের বিরোধিতা করে আবার এ দেশ থেকে অনেক বিত্ত বৈভবের মালিক হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা শহীদ পরিবারের লাঞ্ছনা দেখেছি। এখন সময় এসেছে তাদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার। শহীদ পরিবারকে দেওয়ার। এ সম্পত্তির প্রতি তাদের কোনও অধিকার নেই। কারণ তারা তো বাংলাদেশকে স্বীকার করে না।সংগঠন হিসেবে জামায়াতে ইসলামের বিচারও দাবিকরেছেন শাহরিয়ার কবীর। তিনি বলেন, এ সব সংগঠনের বিচার না হলে শহীদ পরিবারকে অপমান করা হবে।ডা. আলীম চৌধুরীর স্ত্রী শ্যামলী নাসরীন চৌধুরী বলেন, একটি দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটল। ৪৪ বছরের প্রতীক্ষা। এত বছর শোকাহত ও মর্মাহত ছিলাম। মনে হয়েছিল আর বিচার পাব না। এ ফাঁসির মধ্য দিয়ে বিচার না পাওয়ার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসলাম। তিনি বলেন, ৪৪ বছর ধরে অনেক কষ্ট ছিল। দুঃসহ জীবন যাপন করেছি। এখন সুবিচার পেলাম। সত্যি শান্তি লাগছে। স্বস্তিও পাচ্ছি। এর জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন তিনি।
