ভাড়াটের শিশুপুত্রদের কান্নাকাটিতে বিরক্ত হয়ে পড়েছিলেন গৃহকর্ত্রী স্ত্রী। নানা ‘ভয়ভীতি’ এমনকি ‘হত্যার হুমকিতে’ও কাজ না হওয়ায় শেষে এক শিশুকে ঘাড় মটকে মেরেই ফেললেন তিনি। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে বরিশালের বানারীপাড়া পৌর শহরের ৯নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে বলে জানান বানারীপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল আহসান। তিনি জানান, নিহত শিশুটির নাম হাফিজুল, তার বয়স সাড়ে তিন বছর। অভিযুক্ত গৃহকর্ত্রীর নাম নূপুর বেগম। তিনি ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা বাবলা মৃধার স্ত্রী। নিহত হাফিজুলের বাবা রিকশাচালক রিপনের অভিযোগ, ঘরভাড়া নেওয়ার পর থেকেই তার দুই শিশুপুত্রের কান্নাকাটিতে বিরক্ত হয়ে একাধিকবার শিশুদের ‘মেরে ফেলার হুমকি’ দিয়েছেন। শুক্রবার সকালে নতুন বাসায় উঠে যাওয়ার কথা ছিল তাদের। তিনি আরো জানান, বৃহস্পতিবার রাতে বাসা থেকে মালামাল স্থানান্তরের সময় শিশুরা চিৎকার করতে থাকলে নূপুর বেগম ঘরে ঢুকে হাফিজুলকে খাটের ওপর ‘আছাড় মারেন’ ও ‘ঘাড় মটকে’ দেন। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় হাফিজুলকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (শেবাচিম) নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে ঢাকায় স্থানান্তরের কথা বলেন। কিন্তু তার হাতে পর্যাপ্ত টাকা ছিল না। তাই ঢাকাতে স্থানান্তর করতে না পেরে আবারও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেই ফিরিয়ে আনা হয় শিশুটিকে। ফলে উন্নত চিকিৎসার অভাবে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টায় হাফিজুল মারা যায়। মো. রিপন মিয়া বলেন, বাড়িওয়ালির ভয়ে আমরা বাসা ছেড়ে চলেই যাচ্ছিলাম। কিন্তু তার হাত থেকে নিস্তার মেলেনি আমার ছেলের। আমি অর্থ জোগাড় করতে পারিনি। আমার ছেলেটিকে আমি বাঁচাতে পারলাম না। ওসি জিয়াউল আহসান আরো জানান, এ ঘটনায় নূপুর বেগমের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন মো. রিপন মিয়া। ঘটনার পর থেকে নূপুর ‘পলাতক’ থাকলেও তাকে আটকের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
-kalerkantho.com