রিপোর্টঃ মেহেদী হাসান সোমবার শীতের কুয়াশাচ্ছন্ন সকাল। পূর্বাকাশে নতুন সূর্য। বছরের প্রথম দিন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে স্কুলে স্কুলে শিশু শিক্ষার্থীদের ভিড়। সবার ব্যাকুলতা নতুন বইয়ের জন্য। এরপর হাতে হাতে উঠল নতুন বই। বইয়ের ওপরে একটি করে লাল গোলাপ। লাল-সবুজের পাতলা ফিতায় বাঁধা আল্পনা সম্বলিত নতুন বই। এরপরই আনন্দে আত্মহারা শিশুপ্রাণ। কেউ বুকে জড়িয়ে ধরে, কেউ বইয়ের মলাটে চুমু দিয়ে, কেউ হাত উঁচিয়ে, কেউ নতুন বইয়ের গন্ধ শুঁকে বইপ্রাপ্তির উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে কোমলমতি শিশুরা। এভাবেই বই বিতরন অনুষ্ঠান এর মাধ্যমে শুরু হলো নতুন বছর। শিশুদের মুখের হাসি আর আনন্দ মুখর পরিবেশে বই বিতরন কার্যক্রম চলতে থাকে। দুর্গাপুরে বেশ কয়েকটি স্কুল পরিদর্শনের পর জয়নগর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ শাজাহান আলীর সাথে সাক্ষাতকারের সময় তিনি বলেন প্রতি বছর উৎসব মুখর পরিবেশে বই বিতরন অনুষ্ঠান পালিত হয়। গত বছেরের তুলনায় এই বছর ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি ছাত্র ছাত্রীদের সংখ্যা বেড়েছে বলেও জানান তিনি। বছরের প্রথম দিন শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দিতে পারায় খুব ভাল লাগছে। উক্ত বই বিতরন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগদান করেন ৭নং জয়নগর ইউনিয়ন এর আওয়ামী লীগ এর সভাপতি এবং হাট কানপাড়া জবেদা ডিগ্রি কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল জনাব মোঃ আব্দুল জালাল সরকার। এবং ওই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মোঃ কলিমুদ্দিন সরকার। তার সাথে বই বিতরন অনুষ্ঠানে যোগ দেন বিশিষ্ট সমাজসেবক মোঃ মিজানুর রহমান(ম্যানেজার যমুনা ১)। অনুষ্ঠানে বিশেষ ভূমিকা পালন করেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী জনাব মোঃ আঃ জলিল সরকার। অনুষ্ঠান পরিচালনায় ছিলেন জয়নগর উচ্চ বিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা বিষয়ের শিক্ষক মোঃ এজাজুল হক। উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত জয়নগর উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সম্মানিত সদস্যরা এই বই উৎসবে শিশুদের হাতে নতুন বই তুলে দেন। বই পাওয়ার আনন্দের কথা জানতে চাইলে ৮ম শ্রেণির প্রথম বালিকা মোসাঃ আফরিন আজিম বাধন রাজশাহীর কণ্ঠকে জানায় বছরের প্রথম দিন বই পাওয়ার মাধ্যমে শুরু হলো। এই জন্য বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। প্রতিবছর জানুয়ারি মাসে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুদের হাতে বই তুলে দেওয়া একটি রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। সেজন্য নতুন বছরের জানুয়ারি মাসের পহেলা তারিখে সরকার বই উৎসবের ঘোষণা দিয়েছে। বাংলাদেশের প্রাথমিক শিক্ষা হলো সার্বজনীন অর্থাৎ বিনা খরচে সব শিশুর জন্য প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সেজন্য আগে প্রতি বছরের শুরুতে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত প্রত্যেক ক্লাসের ছাত্র ছাত্রীদের বিনামূল্যে নতুন একসেট বই বিতরণ করা হতো, কিন্তু এখন তা আরো সম্প্রসারিত করে প্রথম থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত করা হয়ে থাকে।
